আধুনিক যুগে প্রায় সকলের বাড়িতেই ডেক্সটপ পিসি বা ল্যাপটপ দেখতে পাওয়া যায়। আর পিসির বিভিন্ন ধরনের সমস্যার মধ্যে পিসি ক্রাস একটি অন্যতম সমস্যা। এ সমস্যার সম্মুখে কম বেশী সকলেই পড়ে থাকে। সেজন্য এ সমস্যা থেকে উত্তরনের জন্য আপনাদের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ন টিপস নিচে দেয়া হলো। এগুলো অনুসরন করলে আমরা আমাদের পিসিকে ক্রাস হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করতে পারি।
Hardware conflict
হার্ডওয়ার এর সংঘর্ষ আবার কি ? উইন্ডোজ ক্র্যাশ করার এটাই প্রধানত কারণ। এক হার্ডওয়ার ডিভাইস অন্য আরেক হার্ডওয়্যার ডিভাইসের সাথে কমিউনিকেট করে এক ধরনের চ্যানেলের মাধ্যমে, যাকে বলে Interrupt request channel (IRQ)। এবং এই IRQ প্রতিটি ইউনিক হতে হবে। মানে একটি IRQ আরেকটি IRQ থেকে ভিন্ন হতে হবে। যেমন : প্রিন্টার সাধারণত কানেক্ট হয় যে চ্যানেলে তা হচ্ছে IRQ 7, কীবোর্ড কানেক্ট হয় IRP 1 এবং ফ্লপি কানেক্ট হয় IRQ 6 চ্যানেলগুলিতে। এই ডিভাইসগুলি চেষ্টা করে নিজেদের জন্য ইউনিট চ্যানেল তৈরি করতে।
যদি এখানে অনেক বেশি ডিভাইস থেকে থাকে, অথবা এই ডিভাইসগুলি সঠিকমত ইন্সটল করা না থাকে তাহলে তাদের ভিতরে দুই বা ততোধিক ডিভাইস একই IRQ শেয়ার করে থাকে। যখন ইউজার চেষ্টা করে উভয় ডিভাইসকেই একই সময় ব্যবহার করতে, ঠিক তখনই কম্পিউটার ক্র্যাশ করে।
নিশ্চিত হবার উপায় হচ্ছে যদি কম্পিউটার হার্ডওয়্যার কনফ্লিক্ট হয়ে থাকে তাহলে Start -> Settings -> Control Panel -> System -> Device manager এ গিয়ে দেখা যাবে কোন কোন হার্ডওয়্যারের পাশে হলুদ আইকন ‘!’ এসে বসে আছে। সেই হার্ডওয়্যারটিতে ক্লিক করে প্রোপার্টিজে গেলে দেখা যাবে IRQ নাম্বারটি যা সেই ডিভাইসটি ব্যবহার করছে এখন। যদি এই নাম্বার দুইবার হয়ে থাকে তাহলে বুঝতে হবে হতে পারে দুইটি ডিভাইস এই নম্বরটি ব্যবহার করছে।
এই সমস্যা হলে যা করতে হবে :
ডিভাইস ম্যানেজারে গিয়ে সেই সমস্যাপূর্ণ ডিভাইসটি বা ডিভাইসগুলি আনইন্সটল করে আবার ইন্সটল করতে হবে। কোন কোন সময় ড্রাইভারগুলি আপডেট দিতে হতে পারে। ড্রাইভার সংগ্রহে না থাকলে নিচের লিংক থেকে চেষ্টা করা যেতে পারে –
http://download.cnet.com/windows/drivers.
যদি ডিভাইসটি হয়ে থাকে সাউন্ড-কার্ড অথবা, মডেম তাহলে সেগুলি খুলে মাদারবোর্ডের অন্যকোন স্লটে লাগিয়ে দেখা যেতে পারে। যখন কম্পিউটার এর ভিতরে কাজ করা হবে (অর্থাৎ কম্পিউটার এর হার্ডওয়্যার খুলার সময়) অবশ্যই সুইচ অফ করে নিতে হবে।
Bad Ram
নাম শুনেই বোঝা যাচ্ছে ব্যাপারটি কি হতে পারে। RAM এর সমস্যার কারণেও এই BSOD বা ব্লু-স্ক্রিন-জনিত সমস্যা হতে পারে এবং ম্যাসেজ আসতে পারে “Fatal Exception Error.”। ফ্যাটাল ইরোর গুরুত্বপূর্ণ হার্ডওয়্যার সমস্যা দেখায়। কোন কোন সময় এই ইরোর বুঝায় যে, কোন একটি অংশ ভাঙ্গা আছে এবং রিপ্লেস করার প্রয়োজন।
কিন্তু এই RAM এর জন্য যে Fatal ইরোর আসে তার কারণ হতে পারে র্যামটি/র্যামগুলি ঠিক মত match করে নাই অর্থাৎ mismatch হয়েছে। যেমন : র্যামের বাস-স্পিড রয়েছে যা মাদারবোর্ডের বাস-স্পিডের সাথে মিলতে হবে। যদি না মিলে তাহলে ফ্যাটাল ইরোর আসবে। এই সমস্যার সমাধানে জন্য, সঠিক বাস-স্পিডের র্যাম মাদারবোর্ডে লাগাতে হবে। এবং একাধিক র্যাম থাকলে সমস্যা-ওয়ালা র্যামটি ডিটেক্ট করে সেটা খুলে ফেলতে হবে। এছাড়াও RAM এর Wait State নামক একটি ফাংশন আছে যা বায়োস এ গিয়ে নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। সেই ফাংশনটি BIOS Settings এ গিয়ে বাড়িয়ে দিতে হবে প্রয়োজন হলে। তাহলে আশা করা যায় এই সমস্যার থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যাবে।
BIOS settings
প্রতিটি মাদারবোর্ডের সাথে চীপসেট সেটিংস দেয়া থাকে যা ফ্যাক্টরি থেকেই ডিফল্ট সেটিংস দিয়ে রাখে। এই সটিংস এ প্রবেশ করার জন্য কম্পিউটার বুট করার সময় কীবোর্ডের F2 অথবা, Delete বাটন চাপতে হবে। একবার বায়োসে প্রবেশ করলেই অতিরিক্ত সাবধানতার সাথে সেই সেটিংস কন্ট্রোল করতে হবে।
একটি কমন BIOS error হচ্ছে CAS latency যা RAM কে রেফার করে। পুরাতন র্যাম এর তিনটা CAS latency থাকে আর নতুন SDRAM এ থাকে ২টি। এই অপশন যদি কোন কারণে ভুল হয়ে থাকে তাহলে RAM লক হয়ে যেতে পারে অথবা, কম্পিউটার এর ডিসপ্লে ফ্রিজ হয়ে যেতে পারে। যদি সম্ভব হয় তাহলে বায়োসে গিয়ে IRQ নম্বর সেটিংস অটো করে দিয়ে রাখাই ভালো।
Hard disk drives
এক মাস পর পর হার্ডডিস্ক ড্রাইভ এর তথ্যগুলি ফ্র্যাগমেন্ট করা উচিত। Screen Freeze জনিত সমস্যা থেকে রেহাই পেতে এটা অনেক কার্যকর। উইন্ডোজ এর Start -> Programs -> Accessories -> System Tools -> Disk Defragmenter এ গিয়ে রান করাতে হবে। এটা উইন্ডোজ এ ডিফল্টই দেয়া থাকে।
এই ডিফ্রাগমেন্ট চলাকালীন ভালো হয় পিসিতে কাজ না করা। তাই শিডিউল সেট করে রক্ষা যেতে পারে কবে, কখন এই প্রসেসটা হবে। আর এই জন্য Windows এর Task Scheduler টা ব্যবহার করতে হবে।
হার্ডডিস্